শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন

টেস্ট সংস্কৃতির ঘাটতিই উন্নতির অন্তরায়!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২

টেস্টে বাংলাদেশের কেন ধারাবাহিক উন্নতি হচ্ছে না? টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ২২ বছর পূর্ণ হওয়ার দিনে এমন প্রশ্ন অবান্তর হওয়ার কথা। কিন্তু সাদা পোশাকে এখনও বাংলাদেশের নামের পাশে প্রশ্নবোধক চিহ্নটা সরেনি!

বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো সেন্ট লুসিয়ায় যখন এই প্রশ্নের মুখোমুখি মাঠে তখন আরেকটি বাজে দিন কাটিয়েছে বাংলাদেশকে। প্রায় একই রকম উইকেটে বাংলাদেশের কোনো ব‌্যাটাসম‌্যান যেখানে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারেনি সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্স একাই ভুগিয়েছেন। সেঞ্চুরিতে রাঙিয়েছেন নিজের ইনিংস। অথচ সামর্থ‌্যে বাংলাদেশের কেউ-ই পিছিয়ে নেই। সাকিব, তামিম ১৫ বছরেরও বেশি সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাটিয়ে দিয়েছেন। জয়, শান্তরা বড় কিছু করতে পারেন সেই সামর্থ‌্য আছে। লিটনের ব‌্যাটে তো এখন রানের ফোয়ারা। তবুও কেন দল ভুগছে?

ডমিঙ্গো কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন, দেশের মাটিতে কয়েকটি জয় বাংলাদেশের ক্ষতি করেছে। আত্মতৃপ্তিতে ভোগার কথাই বুঝিয়েছিলেন তিনি। তবে দেশের বাইরে সমস‌্যা কোথায়? ডমিঙ্গো এবার শোনালেন, টেস্ট সংস্কৃতি ঘাটতির কথা। অবশ‌্য ডমিঙ্গো এবারই প্রথম এমনটা বলেছেন তা নয়। বা ডমিঙ্গোই প্রথম বলেছেন তা নয়। আদর্শ টেস্ট সংস্কৃতি গত ২২ বছরে গড়ে উঠেনি। টেস্ট সংস্কৃতি মানে শুধু মাঠের ২২ গজে ব‌্যাটিং-বোলিং ভালো করা নয়। এটা পুরোটাই দেশের ক্রিকেটের আয়না।

ক্রিকেট প্রশাসকদের ভাবনা, ক্রিকেট পরিচালনার ধরন, ক্রিকেটারদের মানসিকতা, দেশের ক্রিকেটের সুযোগ-সুবিধা সব মিলিয়েই টেস্ট সংস্কৃতি। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ পরাশক্তি হবার পেছনে বড় কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটে এর প্রতিদ্বন্দ্বীতা ও ক্রিকেটারদের প্রায়োরিটি। অথচ সাদা পোশাকে এখনও ধুকছে বাংলাদেশ। অতীতে এ দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটকে আদর করে ‘পিকনিক টুর্নামেন্ট’ নামেও ডাকা হতো। এখন সেই ভাবনার পরিবর্তন আসলেও প্রতিদ্বন্দ্বীতার ঝাঝ আসেনি। তাতে এই ফরম‌্যাটে ধারাবাহিক উন্নতিও হয়নি।

ডমিঙ্গোও টেস্ট সংস্কৃতির প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে এলেন। সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো বলছিলেন, ‘টেস্ট দলের অনেক দূর যাওয়া বাকি। মৌলিক জিনিস, টেস্ট ম্যাচ খেলার ইচ্ছা, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিক। অন্য দলগুলো থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে। কারণ, আমাদের টেস্ট ম্যাচ সংস্কৃতি সেখানে নেই যেখানে থাকা উচিত।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বর্তমান টেস্ট দলে নেই স‌্যার ভিভিয়ান সোবার্স, ব্রায়ান লারার মতো তারকা ক্রিকেটার। দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ‌্যে বড় তফাৎ নেই। কিন্তু নিজেদের খেলাটা ঠিক বুঝে এগিয়ে যাচ্ছেন মায়ার্স, ব্লাকউড, ব্রেথইওয়েটরা। বাংলাদেশেরও তেমন পারফরমার লাগবে এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে হবে বলে মনে করছেন ডমিঙ্গো, ‘টেস্ট ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতি আছে। আশি-নব্বইয়ের দশকে তারা বিশ্বের সেরা টেস্ট দল ছিল। তারা তাই জানে, টেস্ট ম্যাচ কীভাবে খেলতে হয়। ওদের আইকনিক অনেক ক্রিকেটার আছে, যারা টেস্ট ম্যাচে ভালো করেছেন। আমাদের টেস্ট ম্যাচ সংস্কৃতি এখনও সেখানেই নেই, যেখানে থাকা উচিত।’

খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলেও এই ফরম‌্যাটে ২২ বছর কাটিয়ে দিলো বাংলাদেশ। আর কত সময় গড়ালে সাদা পোশাকে কোমড় সোজা করে দাঁড়াবে বাংলাদেশ? প্রশ্নটা সময়ের কাছেই তোলা থাক।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS