রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান: ১৩ মামলা চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪ পরিবারকে ৬৪ লাখ টাকার চেক প্রদান করলো বিআরটিএ লেদার ইন্ডাস্ট্রি চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫, চামড়া ও জুতা শিল্পের অগ্রদূত ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা নড়াইল-১ আসনে পরিবর্তন ও ন্যায়ের প্রত্যয়ে পূর্ব সমাবেশে নেতৃবৃন্দের আহ্বান কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-র বার্ষিক রিস্ক কনফারেন্স ২০২৫ অনুষ্ঠিত উদ্যোক্তাদের জন্য নানান সেবা নিয়ে এসএমই মেলায় ইসলামী ব্যাংক জাতীয়তাবাদী কৃষকদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এর শোকবার্তা কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১১৪ জন শহিদের মরদেহ উত্তোলন শুরু আজ থেকে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পর জাপানে বিওয়াইডি সিলায়ন ৬ উন্মোচন

২০ লাখ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট দিল অর্থনীতি সমিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ২২ মে, ২০২২
  • ৫৫ Time View

২০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। রোববার (২২ মে) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও তারা বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দিয়েছে।

বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দেওয়ার সময় সংগঠনের সভাপতি অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত বলেন, প্রচলতি বাজেট প্রণয়ন করা হয় অর্থের প্রাপ্যতার ভিত্তিতে, আর অর্থনীতি সমিতির বাজেট প্রস্তাব প্রণীত হয় মানুষের চহিদার ভিত্তিতে। এরপর অর্থ জোগাড়ের চিন্তা। তবে এই সমীকরণ জটিল। অর্থনীতি সমিতি বাজেট ভারসাম্যের পক্ষে নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভারসাম্যের পক্ষে, সে জন্যই সরকারের বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি অংকের বাজেট প্রস্তাব করে অর্থনীতি সমিতি।

বেকারত্ব বেশি থাকলে উচ্চ মূল্যস্ফীতি অনেকটা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে চলছে বৈশ্বিক পরিসরে মন্দাভাব ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই পরিস্থিতিকে দুঃসময় আখ্যা দিয়ে আবুল বারকাত বলেন, এ সময় মানুষ জনকল্যাণকামী বাজেট প্রত্যাশা করে। সরকারি উদ্যোগে শোভন কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মত দেন তিনি। তাঁর আশা, এই বিপর্যয় মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি বৃদ্ধিও সুযোগ সৃষ্টি করবে।

বিকল্প বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ২০ লাখ ৫০ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। যা বর্তমান বাজেটের আকারের চেয়ে ৩ দশমিত ৪ শতাংশ বেশি। এই বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। ফলে ঘাটতি ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা । উন্নয়ন বাজেট ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। এই বাজেটে শুধু আকারের দিক থেকেই বড় নয়, এটি জনকল্যানমুখী ও উন্নয়নমুখী বাজেট।

ঘাটতি তুলনামূলক বেশি হলেও ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণ এবং দেশীয় ব্যাংকখাত থেকে অর্থ নেওয়া হবে না। এর পরিবর্তে স্বাধীনতার পর থেকে গত ৪৬ বছরের পুঞ্জিভূত কালো টাকার ৫ শতাংশ ও পাচারকৃত অর্থের অন্তত ২ শতাংশ বাজেটের আয় খাতে আনতে পারলে অর্থের ঘাটতি অনেকটাই কমে আসবে। বিকল্প বাজেটে আয়ের ক্ষেত্রে ৫৭ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর আর ৪৩ শতাংশ পরোক্ষ কর আহরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরোক্ষ করের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ করের উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। আয়ের ক্ষেত্র হিসেবে ২৭ টা নতুন ক্ষেত্রের কথা বলা হয়েছে। আয়ের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রচলিত পথ অনুযায়ী না হেঁটে বিকল্প পথে হাঁটার উপর জোর দেন তিনি।

এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দপ্রাপ্ত খাত প্রস্তাব করা হয়েছে- প্রথমত- সামাজিক নিরাপত্তা খাত, দ্বিতীয়ত- শিক্ষা ও গবেষণা, তৃতয়ীত- প্রযুক্তি, চতুর্থত- প্রশাসন ও পঞ্চমত- স্বাস্থ্যখাত। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে কৃষি-জলাভূমি সংস্কারে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানান আবুল বারাকাত। এ ছাড়া হাওর-বিল অঞ্চলের মানুষদের জীবনের উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ গঠন করে ২ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

জনগণতান্ত্রিক বাজেটের মূল লক্ষ্যের বিবরণ দেন আবুল বারাকাত। সেগুলো হলো- ২০৩২ সালের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে আলোকিত ও শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে পরিণত করা, বৈষম্য, দারিদ্র্য ও বহুমুখী দারিদ্র্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনা, পরজীবী লুটেরাদের সম্পদ সমাজের নিচের সারির মানুষের মাঝে বিতরণ করা, দেশীয় উন্নয়ন কৌশলে সবচেয়ে জোর দেওয়া, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও কৃষি জলাভূমিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া, মানুষের জন্য শোভন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

২০১৮ সাল থেকেই বিশ্বে অর্থনীতিতে মন্দাভাব দেখা যাচ্ছে। এরপর শুরু হয় কোভিড-১৯। তার প্রভাব শেষ হতে না হতেই শুরু হয়ে গেল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ কত দিন চলবে, তা কেউ জানে না। যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। মূল্যস্ফীতি যেন অর্থনীতিকে ঘূর্ণন চক্রের মধ্যে না ফেলে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো স্বস্তিকর পর্যায়ে আছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে। তবে ২০২৭-২৮ সাল থেকে ঋণ পরিশোধ শুরু হলে এই স্বস্তিভাব হয়তো অতটা থাকবে না। এরপর ২০৩২ সাল থেকে সব ঋণ পরিশোধ শুরু হলে বাস্তবতা পুরোপুরি বোঝা যাবে বলে মত দেন আবুল বারকাত।

সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আইনুল ইসলাম। বিকল্প বাজেট সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও কনফারেন্সে দেশের ৬৪টি জেলা, ১০৭টি উপজেলা এবং ২১টি ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা যুক্ত ছিলেন।

চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটের আকার বা মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৭.৫ শতাংশ। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ধরা হয় ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS