নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সরকারের উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভাবে মুরগির বাচ্চা ও পোল্ট্রি ফিড উৎপাদন করে প্রান্তিক খামারীদের মাঝে ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় কার্যক্রম চালু করতে হবে তাহলেই কর্পোরেট সিন্ডিকেট ভাঙবে প্রান্তিক খামারীরা ন্যায্য মূল্যে ফিড মুরগির বাচ্চা কিনতে পারবে ডিম মুরগির উৎপাদন খরচ কমবে এবং ডিম মুরগির দামে স্বস্তি ফিরে আসবে ভোক্তা ন্যায্যমূল্যে ডিম মুরগি কিনতে পারবে প্রান্তিক খামারিরাও লাভবান হবে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন দেশব্যাপী ডিম ও মুরগির বাজারে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে, ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট বন্ধ করার এবং প্রান্তিক খামারিদের রক্ষার জন্য সরকারের কাছে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন বাড়াতে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বড় কর্পোরেট কোম্পানির
একচেটিয়া আধিপত্যের অবসান ঘটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ উদ্যোগ সফল হলে স্থানীয় খামারিরা তাদের উৎপাদন বাড়িয়ে বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের ডিম ও মুরগির সংকট দূর করতে সক্ষম হবে। ফিড এবং মুরগির বাচ্চার বাজারে বড় কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটের কারণে প্রান্তিক খামারিদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এসব কোম্পানির একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে এবং দাম বৃদ্ধি করছে। করোনার আগে দেশের প্রান্তিক খামারিরা ডিম ও মুরগির উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করত। স্থানীয় পর্যায়ে ছোট খামারিদের পণ্য সরবরাহের কারণে বাজারে প্রতিযোগিতা ছিল এবং দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু কর্পোরেট কোম্পানির আধিপত্য বাড়ার কারণে বর্তমানে এই প্রতিযোগিতা অনেকটাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।বাজারে কর্পোরেট সিন্ডিকেটের আধিপত্যের কারণে প্রান্তিক খামারিরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সঠিক দামে বিক্রি করতে পারছে না। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা দিন দিন ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।”
ডিম আমদানির কোন প্রয়োজন নেই – দেশে ডিম ও মুরগির সংকট নেই, বরং সিন্ডিকেটের কারণে বাজার অস্থিতিশীল। স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি “ডিম আমদানি না করে যদি প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সহায়তা দেওয়া হয়, তবে দেশেই ডিমের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এতে আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং
স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।”কন্ট্রাক্ট ফার্মিং পদ্ধতিতে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ফিড, বাচ্চা ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করে খামারিদের জিম্বি করে নিয়ন্ত্রণে রাখছে। এতে খামারিরা স্বাধীনভাবে বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারছে না এবং তাদের লাভ কমে যাচ্ছে। কন্ট্রাক্ট ফার্মিংকে “নীল চাষের মত“কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর এই পদ্ধতি দেশের ক্ষুদ্র খামারিদের স্বনির্ভরতার পথে বাধা তৈরি করছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রান্তিক খামারিরা
তাদের ব্যবসা ধরে রাখতে পারবে না।”সরকারের প্রতি প্রস্তাবিত সুপারিশমালা-১. সিন্ডিকেট ভাঙতে কার্যকর ব্যবস্থা: ফিড ও মুরগির বাচ্চার বাজারে কর্পোরেট সিন্ডিকেট বন্ধ করতে কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ। প্রান্তিক খামারিদের সরাসরি পণ্য বিক্রির সুযোগ তৈরি। ২. ক্ষুদ্র খামারিদের জন্য জামানতবিহীন ঋণ: – বড় কর্পোরেট কোম্পানির ঋণ সুবিধা সীমিত করে ক্ষুদ্র খামারিদের জন্য ব্যাংক ঋণ সহজলভ্য করা। সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ প্রদান। ৩. প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা: – খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন।
আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিত। ৪. ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তা:-ডিম ও মুরগির ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ। বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা।৫. কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নিয়ন্ত্রণ:-কর্পোরেট কোম্পানির কন্ট্রাক্ট ফার্মিং পদ্ধতির অপব্যবহার রোধে আইন প্রণয়ন। ক্ষুদ্র খামারিদের স্বাধীনতা রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ। দীর্ঘমেয়াদী সুফল – প্রান্তিক খামারিদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও উপকরণ সরবরাহ করা হলে:-দেশে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বাড়বে। বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।স্থানীয় খামারিদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্থানীয় সাপ্লাই চেইন শক্তিশালী হবে।“ছোট খামারিদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করা হলে অল্প সময়ের মধ্যেই ডিম ও মুরগির বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে এবং দেশ আরও স্বনির্ভর হবে।”সব ক্ষুদ্র খামারি ও ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানাচ্ছি, একত্রিত হয়ে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। সরকার যদি এই খাতের প্রতি যথাযথ দৃষ্টি দেয় এবং প্রান্তিক খামারিদের সহায়তা করে, তবে বাংলাদেশ শিগগিরই ডিম ও মুরগির উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন করবে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply