বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৭ অপরাহ্ন

হবিগঞ্জে জনকরাজ ও ন্যাশনাল-৪ হাইব্রিড ধান বীজে গেড়া না গজায় দিশেহারা কৃষকরা

লিটন পাঠান
  • আপডেট : বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চলতি মৌসুমকে সামনে রেখে জনকরাজ ও ন্যাশনাল-৪ হাইব্রিড ধান বীজ ক্রয় করে কৃষকরা প্রতারিত হয়েছেন এ ধান বীজে গেড়া না। গজায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এতে জেলা কয়েক হাজার কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

ব্যবসায়ী কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, চলতি বোরো মওসুমে হবিগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলায় এনএসি নামক একটি ধান বীজ কোম্পানি ব্যবসায়ীদের কাছে প্রায় ৩শ টন জনকরাজ ও ন্যাশনাল-৪ হাইব্রিড ধান বীজ বিক্রি করে। ওই ব্যবসায়ীদের কাছ কৃষকরা ধান বীজ ক্রয় করেন চারা উৎপাদনের জন্য। কিন্তু কৃষকরা যখন ধান বীজগুলো গেড়া উঠার জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখছেন তখন ধানের বীজে গেড়া আসছে না। কিছু ধান বীজে গেড়া আসলেও বীজতলায় গিয়ে চারা গোজানোর পরই মারা যাচ্ছে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার ভাটি অঞ্চলের অধিকাংশ 

কৃষকরাই জনকরাজ ও ন্যাশনাল-৪ হাইব্রিড বীজ ক্রয় করেছেন কিন্তু ধান বীজ যখন পানি ভিজিয়ে রাখার ৫ দিনের গেড়া উঠছে না গেড়া না উঠায় ধানের বীজ তলা তৈরী করতে পারছেন না। এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলার কাটখাল গ্রামের কৃষক সৈয়দুল মিয়া জানান, চলতি মওসুমে ৫০ কের জমিতে চাষ করার পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। ওই জমিগুলোর জন্য তিনি বিভিন্ন জাতের ৫০ কেজি ধান বীজ ক্রয় করেন। এর মধ্যে ১০ কেজি ও ন্যাশনাল-৪ ধান বীজও ক্রয় করেন। প্যাকেটগুলো বাড়িতে নিয়ে ৫ দিন পর খুলে দেখি বীজগুলো পুরাতন দেখা যাচ্ছে। তারপর কৃষিবিদদের নিয়ম মেনেই আমি পানিতে ভিজিয়ে রাখি। ২/৩দিনের ভিতরে ধান বীজের গেড়া (ফুল) দেখা গেলেও জনকরাজ ধান বীজগুলো পানিতে ভেজানোর ৫দিন পার হয়ে গেলেও  গেড়া উঠেনি। আর ন্যাশনাল-৪ কিছু ধান বীজের গেড়া উঠলে বীজতলায় ফেলানোর একদিন পরই ধানগুলো পচে যাচ্ছে।

এতে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এখন জমিগুলো চাষ করতে পারবো কি না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। এ অবস্থায় যে দোকান থেকে বীজগুলো ক্রয় করেছেন, সেই দোকানের মালিককে ক্ষতির বিষয়গুলো অবগত করেন। এ প্রেক্ষিতে দোকানের মালিক কৃষক সৈয়দুল মিয়া বাড়িতে গিয়ে বীজতলা পরিদর্শন করে এ সত্যতা পান। এ সময় এনএসি ধান বীজ কোম্পানির  প্রতিনিধি কৃষক সৈয়দুল মিয়াকে ক্ষতিপূরন দেওয়ার আশ্বাস দেন। বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের মামুন মিয়া জনকরাজ ধান বীজ ১২ কেজি, একই গ্রামের মাওলানা জুবায়ের ৮কেজি, একই উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের তোফাজ্জল মিয়া ১৭ কেজি, সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের আব্দুল করিম, একই গ্রামের শহিদ মিয়া ৭কেজি, টঙ্গিঘাট গ্রামের কালা মিয়া ২ কেজি ক্রয় প্রতারিত হয়েছেন।

শুধু তারাই নয় আরো বহু কৃষক জনকরাজ, ন্যাশনাল-৪ ও হিরা-২ ধান বীজ ক্রয় করে প্রতারিত হয়েছেন, এ ব্যাপারে কৃষক খোকন পাঠান জানান, বীজ গুলো নিয়ম অনুযায়ী ভেজানোর পর ধান বীজগুলোতে গেড়া গজায়নি এতে আমার ১০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এখন আবারও ধান বীজ ক্রয় করতে হবে। তিনি জনকরাজ ধান বীজ ক্রয় না করার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ভেজাল বীজ কিনে কৃষকদের প্রতারিত হওয়ার কথা শুনেছি। কৃষকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS