শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৩১ পূর্বাহ্ন

হিন্দু আইন পরিবর্তন চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মশাল মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ২ জুন, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ অদ্য ২ জুন, শুক্রবার শাহবাগ জাতীয় যাদুঘর চত্বরে হিন্দু আইন পরিবর্তন প্রতিরোধ সম্মিলিত পরিষদের আহ্বানে হিন্দু ধর্মীয় সামাজিক সংগঠন সমূহ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার ও ঢাকা বার এর হিন্দু আইনজীবীদের উদ্যোগে হিন্দু আইন পরিবর্তন চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হিন্দু আইন পরিবর্তন প্রতিরোধ সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট ড. জে. কে পাল মহোদয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুমন কুমার রায় ও শ্রী উত্তম কুমার দাস।

উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক  হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, ইসকন বাংলাদেশ এর ফুড ফর প্রোগ্রাম পরিচালক শ্রীমৎ রুপানুগ গৌরদাস ব্রাহ্মচারী, শ্রীমৎ চিন্ময় গদধর দাস ব্রহ্মচারী, দিপঙ্কর শিকদার দিপু, হিন্দু ল ইয়ার্স অর্গানাইজেশন এর সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট শংকর চন্দ্র দাস, এডভোকেট দীপ্তিষ হালদার, এডভোকেট জিতেন্দ্র চন্দ্র বর্মন, এডভোকেট উজ্জ্বল প্রসাদ, এডভোকেট শ্রী প্রহল্লাদ সাহা, ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল কুমার রায়, বিজয় ভট্টাচার্য, পলাশ কান্তি দে,  এডভোকেট সঞ্জয় কুমার দে দুর্জয়, শ্যামল কান্তি নাগ (সাংবাদিক), ডাঃ এম. কে রায়, শ্রী সাধন দেবনাথ, শ্রী সাজন মিস্ত্র, শ্রী শংকর সরকার, শ্রী নিত্যগোপাল ঘোষ, নিহার হালদার, শ্রী দিপঙ্কর বেপারী, প্রদীপ কান্ত দে, শ্যামল দাস, কৃষ্ণ দাস, পিষুজ দাস, আকাশ শীল, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল মধু, অনিল পাল, সহ হিন্দু ধর্মীয় সামাজিক সংগঠনের প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

এডভোকেট ড. জে. কে পাল মহোদয় বলেন, কোন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর পারিবারিক আইন বা পার্সনাল “ল” সরকার বা রাষ্ট্র ইচ্ছা করলেই পরিবর্তন করতে পারেনা। কেননা পার্সনাল “ল” ধর্মীয় এবং শাস্ত্রীয় বিধি-বিধান এর আলোকে প্রণীত বিধায় এর পরিবর্তন বা পরিবর্তনের  উদ্যোগ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের সামিল। এতদসত্ত্বেও হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ ও তাদের সহযোগী গুটি কয়েক এনজিও এবং ধর্মান্তিরিত ও বিতর্কিত কিছু ব্যক্তি হিন্দু আইন পরিবর্তনের জন্য মরিয়া হয়ে প্রকারান্তরে হিন্দু ধর্মকে অবমাননা করে চলছে। যার প্রতিবাদে দেশের শান্তিপ্রিয় হিন্দু সম্প্রদায় আজ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে।

অধ্যাপক ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আজকের এই প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে আমরা হিন্দু আইন পরিবর্তন করা থেকে রাষ্ট্র এবং সরকারকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা সনাতন ধর্মীয় সামাজিক সংগঠন, ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন, গৌড়ীয় মঠ, প্রণব মঠ এর ধর্মীয় সাধুসন্তুগণ এবং সুপ্রিমকোর্ট ও ঢাকা বার এর হিন্দু আইনজীবীগণ সম্মিলিতভাবে হিন্দু আইন পরিবর্তন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। যার প্রেক্ষিতে মাননীয় আইনমন্ত্রী একাধিকবার আমাদের সাথে বৈঠকে হিন্দু আইন পরিবর্তন করা হবেনা বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। আশাকরি তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন।

দীপঙ্কর শিকদার দিপু বলেন, এতদসত্ত্বে কয়েকদিন পূর্বে অন্য ধর্মঅলম্বী জনৈক ব্যক্তি উক্ত আদালতে একটি রীট পিটিশন দাখিল করলে মাননীয় বিচারপতি কেন হিন্দু আইন পরিবর্তন করা হবেনা মর্মে রুল জারি করায় গোটা হিন্দু সম্প্রদায় সংক্ষুব্ধ হয়েছে। আমরা বাড়বার বলার চেষ্টা করেছি যে, চলমান সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার দাবিগুলো পাশ কাটিয়ে হিন্দু আইন পরিবর্তন করা হলে সাধারণ হিন্দু জনগোষ্ঠী আরও অধিক বিপদাপন্নতার মুখে পতিত হবে।

মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, হিন্দু নারী ও পরিবারগুলির সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন অন্যঅন্য ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর তুলনায় এখনো অনেকটাই নিরাপদ। ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের পারিবারিক এই নিরাপদের জায়গাটিকে স্বর্থান্বেষী মহলটি পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।

সাজন কুমার মিশ্র বলেন, আমরা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি যে, গুটিকয়েক নারীবাদী সংগঠন বিদেশী অর্থের প্রলোভনে হিন্দু নারীদের ড়িসবহ’ং ৎরমযঃং প্রতিষ্ঠার নামে হিন্দু আইন পরিবর্তন এর চক্রান্তে সরকারের পৃষ্ঠপোষকদের সাথে গাট বেধে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্তপ্রায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অবশিষ্ট অস্তিত্বটুকু বিলীন করার গভীর নীলনকশায় লিপ্ত হয়েছে।

পলাশ কান্তি দে বলেন, সনাতনী পারিবারিক আইন পরিবর্তনের চেষ্টা করা হলে সারা বাংলাদেশে কঠোর আন্দোলন এবং প্রয়োজনে সংসদ ঘেরাওসহ হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)-এর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, পারিবারিক আইন পরিবর্তনের চক্রান্ত যারা করবে তাদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। সরকার বা আওয়ামী লীগ যদি হিন্দু আইন পরিবর্তন চক্রান্তে লিপ্ত হয় সনাতন সম্প্রদায় তাদেরকে তালাক দিবে। অতএব, শান্তিপ্রিয় সনাতনী সম্প্রদায়ের মতো বিভাজন সৃষ্টি করা ও সনাতনী সম্প্রদায়কে এদেশ থেকে বিতারণের নীল নকশা বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না। যদি সরকার কোন আইন প্রণয়ন করতে চায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করার পরামর্শ দেন।

সমাবেশে বক্তাগণ সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে হিন্দু আইন পরিবর্তন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা চক্রের মূলহোতা পুলক ঘটক ও তার সহযোগীদের দ্রুত গেফতারের দাবি জানিয়ে শাহবাগ যাদুঘর থেকে মশাল মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবে এসে সমাপ্তি ঘোষণা করেন এবং এই চক্রান্ত বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে সারা বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়কে নিয়ে প্রতিরোধের জন্য গণআন্দোলনের হুশিয়ারি দেন এবং প্রয়োজনে আগামী নির্বাচনে ভোট বর্জনের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS