রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে হিসাব স্থানান্তর, গ্রাহকদের জন্য ২ লাখ টাকা উত্তোলনের সুযোগ এনসিপি ছাড়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা তাসনিম জারার রোববার ইসিতে যাবে তারেক ও জাইমার ভোটার সংক্রান্ত নথি পাঁচ ব্যাংকের হিসাব ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’-এ স্থানান্তর চূড়ান্ত পর্যায়ে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন মো. রাশেদ খান প্রস্তাবিত পরিশ্রমী মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর নিবন্ধন পূর্ব প্রাক-প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গার উদ্যোক্তা ও গণমাধ্যমকর্মী মোঃ আব্দুল্লাহ হকের ২৫তম জন্মদিন উদযাপন  এসো বন্ধুত্বের টানে : নীলমনিগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এসএসসি ১৯৯৭ ব্যাচের উদ্যোগে স্মরণিকা ‘বন্ধন চিরন্তন’-এর মোড়ক উন্মোচন গুলশান থানা এলাকা হতে ৬৫৯ বোতল বিদেশী মদসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ী কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১

চার দিনে ৫০০০ কোটি ডলারের সম্পদ হারালেন আদানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৭৫ Time View

চলতি সপ্তাহে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ হারিয়েছেন ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি। দুর্নীতি ও জালিয়াতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক বিনিয়োগবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চের এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনের পর আদানি গ্রুপের শেয়ারমূল্যে রীতিমতো ধস নামে।

সিএনএন ও রয়টার্সের মতো একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যমতে, প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত মাত্র চার দিনে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারদর প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে। তা ছাড়া আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড এবং আদানি টোটাল গ্যাসের মতো কিছু সহযোগী সংস্থা দৈনিক ২০ শতাংশ পতনের সীমা স্পর্শ করেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি আদানি ও তার কোম্পানির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ বেশ পুরোনো। কয়েক বছর ধরেই আদানি গ্রুপের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশ সরব প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।

আদানির দুর্নীতি ও জালিয়াতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অনুসন্ধান করছিল বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চ। দুই বছরের অনুসন্ধানের পর গত মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।

‘আদানি গ্রুপ: হাউ দ্য ওয়ার্ল্ড’স থার্ড রিচেস্ট ম্যান ইজ পুলিং দ্য লার্জেস্ট কন ইন করপোরেট হিস্ট্রি’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপের থলের বিড়াল বের করে দেয় হিনডেনবার্গ রিসার্চ। 

এই রিপোর্ট এমন সময় সামনে এলো, যখন বাজারে ফের শেয়ার বিক্রি করে তহবিল সংগ্রহের তোড়জোড় চালাচ্ছে আদানি এন্টারপ্রাইজেস। ২০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বাজারে আসবে ২৭ জানুয়ারি। যা বন্ধ হবে ৩১ জানুয়ারি। 

আর চাঞ্চল্যকর ওই প্রতিবেদনের জেরেই ভারতীয় ধনকুবের আদানির করপোরেট সাম্রাজ্যে পতনের সুর। বুধ ও বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সকালেই এই পতনের গতি আরও বেড়ে যায়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, সবশেষ দুই সেশনে ৫০ বিলিয়ন তথা পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বেশি বাজারমূল্য হারিয়েছে আদানি গ্রুপ।

হিনডেনবার্গ রিসার্চের ওই প্রতিবেদনের জেরেই এশিয়ার শীর্ষ ধনীর ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ব্লুমবার্গ। তার মূল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে এরই মধ্যে তারা ২৫০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন।

গ্লোবাল সিআইও অফিসের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার গ্যারি ডুগান বলেন, ‘ইস্যুটি ভারতীয় করপোরেট খাতের কেন্দ্রে আঘাত করেছে, যেখানে বেশ কয়েকটি পরিবার-নিয়ন্ত্রিত সংগঠনের আধিপত্য রয়েছে৷ স্বভাবগতভাবেই তারা অস্বচ্ছ। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের করপোরেট গভর্নেন্সের বিষয়গুলোতে আস্থা রাখতে হবে।’

হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গৌতম আদানির কোম্পানিগুলো কারচুপি করে তাদের শেয়ারদর বাড়িয়েছে। মূলত কোম্পানিতে প্রোমোটর বা মালিকের কারসাজিতে স্টকের দাম বাজারে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে বলে রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনমতে, অন্য লোকের ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচুর শেয়ার কিনে নিজের শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে আদানিরা, যা বিনিয়োগকারীদের চোখে ধুলো দেয়ার সমান। হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে প্রকাশ্যেই আদানি গ্রুপকে স্টকে তছরুপ ও হিসাবে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে। মূলত আদানির পাঁচ কোম্পানির নাম রয়েছে এই জালিয়াতির তালিকায়।

হিনডেনবার্গের রিপোর্ট আরও বলছে, আদানি গ্রুপের পাঁচ বড় কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে ‘ডি-লিস্টিং’ তথা বাদ পড়তে পারে। এই পাঁচ কোম্পানির শেয়ারে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পতন হতে পারে।

বর্তমানে লিকুইডিটি ক্রাইসিস বা নগদের অভাবে ধুঁকছে এই কোম্পানিগুলো। যার ফলে বিপুল ঋণের বোঝা মেটাতে অপারগ আদানি গ্রুপ। সেই কারণেই এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে কোম্পানি।

অতীতে এক মার্কিন কোম্পানিকে নিয়ে একই ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে হিনডেনবার্গ রিসার্চ। দেখা যায়, ওই কোম্পানির ৯২ ডলারের শেয়ার ২ ডলারে নেমে আসে। পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে ডি-লিস্টিং হয়ে যায় সেই কোম্পানি।

সাম্প্রতিক পতনের আগে গত কয়েক বছর গৌতম আদানির জন্য ছিল শুধুই উত্থানের গল্প। ২০২২ সালে এশিয়ার সর্বোচ্চ মুনাফা লগ্নিকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।

গত পাঁচ বছরের উত্থানে ইলন মাস্কের টেসলা ইনকরপোরেশনকেও পেছনে ফেলেছে আদানি এন্টারপ্রাইজ। ধীরে ধীরে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় নিজের অবস্থান পাকা করেছেন গৌতম আদানি।

এমনকি গত সেপ্টেম্বরে কিছু সময়ের জন্য হলেও বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসেন ভারতীয় এ ধনকুবের। ওই সময় আদানি ও তার পরিবার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার।

কিন্তু সাম্প্রতিক পতনের ধাক্কায় ১০ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে আদানির সম্পদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৭০০ কোটি ডলার, যা গত বুধবারের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম।

হিনডেনবার্গ রিসার্চের ওই বিস্ফোরক প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় আদানি গ্রুপ বলেছে, শেয়ার বিক্রির উদ্যোগকে বানচাল করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যে প্রচারের মাধ্যমে তাদের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা হচ্ছে।

আরও বলা হয়েছে, হিনডেনবার্গের এই প্রতিবেদন ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, গবেষণাবিহীন। তারা প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবে। জবাবে হিনডেনবার্গ অবশ্য বলেছে, তাদের প্রতিবেদন পুরোপুরি সঠিক। এর বিরুদ্ধে যেকোনো আইনি পদক্ষেপ হবে অযৌক্তিক।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS