সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫১ অপরাহ্ন

গাইবান্ধা শহরে গরিবের মার্কেট ধনীদের দখলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধা শহরের পি.কে বিশ্বাস রোডের দুইধারে সারি সারি বস্ত্রের দোকান সাজিয়ে বসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এটি গাউন পট্টি হিসেবে খ্যাত। এখানকার দোকানগুলোতে কম দামে শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য কাপড় পাওয়া যায় কয়েক যুগ ধরে। এখানে অল্প দামে কেনাকাটা করেন নিম্নআয়ের মানুষজন। ফলে এটি গরিবের মার্কেট হিসেবেও পরিচিত লাভ করেছে। কিন্তু সেই মার্কেট এখন ধনীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছে। শীত বাড়ার সঙ্গে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এখানে  হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন গরম কাপড় কিনতে।

গাইবান্ধা শহরের পি.কে বিশ্বাস রোড ও টেনিস ক্লাব চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, শীতার্ত মানুষদের গরম কাপড় কেনার দৃশ্য। সব পেশা-শ্রেণির মানুষ এখান থেকে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কাপড় কিনছেন। আর এতে বেকায়দায় পড়ছেন ছিন্নমূল পরিবারের সদস্যরা।

পৌষের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গাইবান্ধা জেলায় জেঁকে বসতে শুরু করছে শীতের তীব্রতা। গত কয়েকদিন ধরে মধ্যরাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে প্রত্যান্ত অঞ্চল। কনকনে এই শীত নিবারণে সব পেশা-শ্রেণির মানুষ ঝুঁকে পড়েছে গরম কাপড়ের দিকে। ওই পট্টিতে কেউ কিনছেন লেপ-তোশক, আবার কেউ কেউ কিনছেন সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার ও মোজাসহ বিভিন্ন ধরণের বস্ত্রাদি। এখানকার অধিকাংশ ক্রেতা ছিন্নমূলের হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের আনাগোনা লক্ষ্যণীয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদী বেষ্টিত গাইবান্ধার প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস চরাঞ্চলে। জেলার অন্যান্য এলাকার চেয়ে চর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি। চরগুলোতে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন। প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ পেরিয়ে কোনো মতে বেঁচে থাকা তাদের। এরই মধ্যে শীতে কাবু সেখানকার মানুষরা। এইসব মানুষদের পক্ষে শীত নিবারণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সামর্থ্য না থাকায় সেই গরিবের মার্কেটেও কিনতে পাচ্ছেন না শীতের কাপড়। অন্য বছরে এই সময়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ দেখা গেলেও এ বছরে তার ব্যর্তয় ঘটেছে বলে অভিযোগ দুস্থ শীতার্তদের।

এদিকে, শীতের তৗব্রতা বেড়ে যাওয়া চরম বেকায়দায় পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষেরা। তাদের শীতের কবলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ার পাশাপাশি গরম কাপড় কেনার ব্যাপারটিও সমস্যায় যোগ হয়েছে তাদের।

গাইবান্ধ শহরের পি.কে বিশ্বাস রোড়ের গাউন পট্টিতে গরম কাপড় কিনতে আসা জাকিরুল ইসলাম নামের এক রিকশা চালক বলেন, ‘শীতের কারণে একদিকে কমেছে রোজগার, অন্যদিকে ছেলে-মেয়েদের শীতবস্ত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। এই মার্কেটে ধনীদের ঠেলায় কাপড়া কেনা দায় হয়ে পড়েছে।’

চরাঞ্চলের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন সরকার নামের এক শ্রমজীবী ব্যক্তি বলেন, ‘হামার জাগাদ এলা খুব জার (শীত) নাগে বাহে। বাড়ির একনা চড়াই বেচে ছোট ছইলের জন্নে গাউন পট্টিতে একনা নিলামী ছুইট্যার কিনব্যার আসছোম। সেটে এলা বড়োলোক মানসের জন্নে পাও দেওয়া যায় না বাবা।’ 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS