
কোটা বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আরও একটি প্রাণ ঝরেছে। বুধবার রাতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে পুলিশের গুলিতে সিয়াম নামে এক তরুণের মৃত্যু ঘটেছে। এদিন রাত ১২টার কিছু পরে আহত সিয়ামকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তার মৃত্যু নিশ্চিত হতে পেরে লাশ হাসপাতালে না ঢুকিয়ে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে বৃহত্তর শনির আখড়া এলাকায় পুলিশের শটগানের গুলিতে ৬ জন আহত হয়। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুই বছরের এক শিশুও রয়েছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ইরান, সোহাগ, বাবু মিয়া ও তাঁর শিশুপুত্র রোহিত মিয়া এবং স্কুলছাত্র মাহিম আহমেদ। আহত ব্যবসায়ী বাবু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দনিয়া এলাকায় শিশুসন্তান রোহিতকে নিয়ে বাসার ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি তাঁর ও ছেলের গায়ে লাগে।
জানা গেছে বুধবার রাতে কয়েকজন ব্যক্তি সিয়ামকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নিয়ে আসেন। পরে মরদেহটি হাসপাতালের ভেতরে না নিয়েই আবার একটি অটোরিকশায় করে ফিরে যান তাঁরা।
সঙ্গে আসা স্বজন জানান, ওই তরুণের নাম সিয়াম (১৮)। তিনি গুলিস্তানের একটি ব্যাটারির দোকানের কর্মচারী। রাতে বাসায় ফেরার পথে হানিফ ফ্লাওয়ারে সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন। এতে ঘটনাস্থলেই সিয়াম মারা যান। পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলেও মারা গেছেন বুঝতে পেরে তাঁরা আর হাসপাতালের ভেতর ঢোকেননি। মরদেহ অটোরিকশায় করে বাসায় চলে যাচ্ছেন।
সিয়ামের গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। তিনি রাজধানীর মাতুয়াইলে থাকতেন।
বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে শনির আখড়া এলাকায় কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামীলীগ ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পরে তা যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষ চলাকালে দুর্বত্তরা মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট রওনা হলেও পুলিশ প্রটেকশনের অভাবে পৌঁছতে পারছে না। এ ঘটনায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি কাজ করছে। সেইসঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ছুড়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সরিয় দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) কোটা আন্দোলনকারীরা দিনভর শনির আখড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। সন্ধ্যায় তাদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। চলেত থাকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সংঘর্ষ শনির আখড়া থেকে কাজলা হয়ে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগও এতে যোগ দেয়। তাতে এই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর মধ্যে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, আন্দোলনকারীরা টোলপ্লাজায় আগুন দিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, টোল প্লাজায় আগুন লাগার খবর পেয়ে দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ প্রটেকশনের অভাবে রাস্তায় আটকে আছে।
এদিকে সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সময় পুলিশের শটগানের গুলিতে ৬ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুই বছরের এক শিশুও রয়েছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ইরান, সোহাগ, বাবু মিয়া ও তাঁর শিশুপুত্র রোহিত মিয়া এবং স্কুলছাত্র মাহিম আহমেদ। আহত ব্যবসায়ী বাবু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দনিয়া এলাকায় শিশুসন্তান রোহিতকে নিয়ে বাসার ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি তাঁর ও ছেলের গায়ে লাগে।
আজ সকাল ১০টার দিকে শনির আখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা এই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সম্পাদক: মোঃ শাহাব উদ্দিন, প্রকাশক: মোঃ শাহজাদা হোসাইন, নির্বাহী সম্পাদক : এম শহিদুল ইসলাম নয়ন
অফিস: ১৪/১৬ কাজলারপাড়, ভাঙ্গাপ্রেস, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬
@ Economicnews24 2025 | All Rights Reserved