
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জোয়ানশাহী হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও শ্রমিক সংকটে পাকা ধান কাটতে পারছেনা কৃষকরা। একদিকে শ্রমিক সংকট অপরদিকে ধানের বাজার দরও কম।
ইতিমধ্যেই উত্তর পূর্ব হাওরাঞ্চলের হাওরগুলো থেকেও নতুন ধান আসতে শূরু করেছে ভৈরব মোকামে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে কৃষি অর্থনীতিতে এর বিরুপ প্রভাব পরবে।
ভৈরবের মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটা ও মাড়াই এর কাজ। কেউ কাটাছে হাতে সনাতন পদ্ধতিতে। কেউ আবার ধান কাটছে কম্বাইন হারবেস্টার মেশিন দিয়ে। নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাওরাঞ্চলের উৎপাদিত প্রায় বেশীর ভাগ ধানই বেচা কেনা হয় ভৈরব মোকামে। আবার মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম, চাঁদপুর, চট্রগ্রাম, আশুগঞ্জসহ আশেপাশের এলাকার রাইস মিল মালিকরা ভৈরব বাজারে নতুন ধান কিনতে আসে। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ হীরা ধান (মোটা ধান) ৭শ থেকে ৭শ৪০ টাকা। আর চিকন ধান (২৮ ও ২৯ জাতের ধান) ৮শ থেকে ৯শ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহের আগে এসব ধানে দাম প্রতি মণে ১শ টাকা বেশী ছিল। খরচ বেশি হওয়ার কারনে ধান উৎপাদনে ব্যয় বেশী। কিন্তু ধানের বাজার মূল্য কম বলে দাবী কৃষকদের। বর্তমানে ধানে যে দাম আছে তাতে কৃষকরা ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে।
কৃষরা বলছেন, উৎপাদন খরচের সাথে ধানের বাজার মূল্য সমন্বয় করে সরকারী খাদ্য গোদামে ধান ক্রয় করলে তারা লাভবান হতেন।

জোয়ানশাহী হাওরের কৃষক জাহের মিয়া, খোরশেদ আলম,সহ অনেকে বলেন, শ্রমিক সংকটের কারণে জমির পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছি না।জমিতে ধান নষ্ট হচ্ছে ৯০০/১০০০ টাকা মজুরি দিয়েও চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এরই মধ্যে ঝড়-বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি এসে তুলিয়ে যাচ্ছে জমি। যদি ভারী বৃষ্টি হয়, তা হলে আমাদের বিপাকে পড়তে হবে। শ্রমিক সংকটে অনেকে স্কুল ছাত্র ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে।
উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান ওসমান গনি বলেন, জোয়ানশাহী হাওরে হাজার হাজার মন ধান উৎপাদন হয়। এ বছরও জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় হাওরের অর্ধেক ধান কাটা হয়েছে। অন্যান্য বছর ধান কাটার সময় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শ্রমিক পাওয়া যেত। এ বছর তাদের খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের এলাকায় শ্রমিকের সংকট রয়েছে। মজুরিও বেশি। একজন শ্রমিককে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা দিতে হয়। তবে জোয়ানশাহী হাওরে তিন থেকে চারটা রাস্তা যদি পাকাকরণ করা হয়। তাহলে কম খরচে কৃষকরা ধান বাড়িতে পৌচাতে পারবে। যদি বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়া যায়, তা হলে আমাদের একটু পোষাবে।
ভৈরব চেম্বার অব-কর্মার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ, সভাপতি মো.হুমায়ুন কবির বলেন, কৃষি সংশ্লিষ্টরা এবার ধানের ভাল ফলন হয়েছে। বর্তমানে ধানে যে দাম আছে তাতে কৃষকরা ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। ফলে আগামীতে কৃষি অর্থনীতিতে এর বিরুপ প্রভাব পরবে। তা ছাড়া সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের থেকে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের বাচাঁতে সরকার শুরু থেকে বাজার মনিটরিং করলে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সুফল পাবে বলে তারা জানান।
সম্পাদক: মোঃ শাহাব উদ্দিন, প্রকাশক: মোঃ শাহজাদা হোসাইন, নির্বাহী সম্পাদক : এম শহিদুল ইসলাম নয়ন
অফিস: ১৪/১৬ কাজলারপাড়, ভাঙ্গাপ্রেস, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬
@ Economicnews24 2025 | All Rights Reserved