
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে রাস্তায় রাবিশ ফেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের ছুড়ির আঘাতে জাহাঙ্গীর মিয়া (৩৬) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর বেচু ব্যাপরি বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর ওই এলাকার হাফিজ উদ্দিনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ৮ মার্চ সকালে বাড়ির কাজ করছিল হানিফ মিয়া। এসময় হানিফ মিয়া রাস্তার গর্তে রাবিশ ফেলছিল। হঠাৎ এসে রাবিশ ফেলার কাজে বাধা দেন তারই চাচাতো ভাই জামাল মিয়া। তিনি ওই ওয়ার্ড যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক। বাধা দেয়ার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহায়তায় বিষয়টি তখনই মিটমাট হয়। এ ঘটনার জেরে বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে জামাল মিয়া, কাসেম মিয়া, তারেক মিয়া, আমান মিয়া, হাকিমুলসহ ১৫ জন হানিফ মিয়ার বাড়িতে হামলা করে। এসময় হানিফ মিয়ার বাতিজা জাহাঙ্গীরকে ছুড়ি আঘাত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারিয়া নাজমুন প্রভা বলেন, ভাবানীপুর গ্রামের একটি ঝগড়ার ঘটনায় জাহাঙ্গীর নামে একজনকে হাসাপাতালে আনা হয়। চিকিৎসা দিতে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার বুকে ছুড়িকাঘাত রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নিহতের চাচা হারুণ মিয়া জানান, আজ সকালে রাস্তায় রাবিশ ফেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের একই বংশের হানিফ মিয়া ও জামাল মিয়ার মধ্যে বাকবিতাণ্ডা হয়। হানিফ তার বাড়িতে নতুন ঘর তুলে। রাস্তায় পানি জমে থাকে বলে এতে রাবিশ ফেলে হানিফ। এতে বাধা দেয় জামাল মিয়া। সকালে বিষয়টি মিমাংসা হয়ে যায়। পরে বিকালে জামাল মিয়ারা দল পাকিয়ে এসে জাহাঙ্গীরকে ছুড়িকাঘাত করে। আমিসহ স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথি মধ্যে সে মৃত্যু বরণ করে। জাহাঙ্গীর বাদাম বিক্রেতা। তার সংসারে দুই ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
এ বিষয়ে হানিফ মিয়া বলেন, বাড়ি সামনে রাস্তায় রাবিশ ফেল ছিলাম। জামাল মিয়া আমার কাজে বাধা দেয়। আমাকে গালমন্দও করে। এঘটনা জেনে আমার বাতিজা জাহাঙ্গীর ক্ষিপ্ত হয়। এ খবর জামাল মিয়ারা জেনে যায়। বিকালে তারা দল বেঁধে এসে আমাকে কিছু করেনি। আমার বাতিজাকে ছুড়িকাঘাত মেরে ফেলেছে জামান, আমান, কাসেম, তারেকসহ গুন্ডাপান্ডারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জামাল মিয়া বলেন, রাস্তায় রাবিশ ফেলাতে আমি কিছু বলিনি। রাস্তায় বৃষ্টি হলেই কাঁদা জমে থাকে। আমি হানিফ মিয়াকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে বলে ছিলাম। এ ঘটনায় আমাকে হানিফ মিয়ার পক্ষ হয়ে জাহাঙ্গীর গালাগাল করে। বিষয়টি আমার বাতিজা কাসেমসহ অন্যান্যরা জেনে যায়। পরে আবার দ্বন্দ্ব বাধে। জাহাঙ্গীর আমার বাতিজা কাসেমকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করতে চেষ্টা করলে ফিরিয়ে দেয় কাসেম। দস্তাদস্তি এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীরের হাতের ছুড়ি আঘাতেই সে নিহত হয়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ফরিদুজ্জামান বলেন, আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে আসি পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্তের পাঠিয়েছি। অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
সম্পাদক: মোঃ শাহাব উদ্দিন, প্রকাশক: মোঃ শাহজাদা হোসাইন, নির্বাহী সম্পাদক : এম শহিদুল ইসলাম নয়ন
অফিস: ১৪/১৬ কাজলারপাড়, ভাঙ্গাপ্রেস, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬
@ Economicnews24 2025 | All Rights Reserved