
সরকারের আগামী ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকও অর্থের জোগান দিবে। বাজারে তারল্য সংকট রয়েছে, সে জন্য সরকার বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়লে মূল্যস্ফীতি বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
শুক্রবার (৩ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এদিন আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে ডলার বিক্রি করে প্রায় ২ লাখ কোটি নগদ টাকা বাজার থেকে তুলে নিয়েছে। প্রয়োজনে সেই টাকা থেকে সকারকে ঋণ দিবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া বিল বন্ডের বিপরীতে টাকা ইস্যু করে অর্থের জোগান দিতে পারে।
তিনি বলেন, আসন্ন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সরকারকে বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্যই টাকা দিবে। আর সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে কোনো সমস্যা হবে না। এমনকি মূল্যস্ফীতিও বাড়বে না।
ডলার সংকট নিয়ে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সংকট মোকাবেলায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ২০ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় ২ লাখ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ফিরে এসেছে। এই টাকা যদি বাজারে থাকতো তাহলে সরকারের ১ লাখ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া কোনো বিষয় হতো না। এখন যেহেতু বাজারে তারল্য সংকট রয়েছে, সে জন্য সরকার বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। এ ছাড়া নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়লে যে মূল্যস্ফীতি বাড়বে তার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের তুলনায় বাংলাদেশে টাকার সরবরাহ কম দাবি করে গভর্নর বলেন, আমাদের টাকা সরবরাহ এই অঞ্চলের মধ্যে সর্বনিম্ন। এটি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ৩৮ শতাংশ। যা ইন্ডিয়াতে ৭৬-৭৭ শতাংশ। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়াতে প্রায় ১০০ শতাংশ। তাই সরকার ঋণ নিচ্ছে বলে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, এটা ঠিক না। মূলত বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
খেলাপির বিষয়ে তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাসেল–৩ কাঠামো মানা হচ্ছে। খেলাপি সরকারি ব্যাংকগুলোতে ১০ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যাংকে ৫ শতাংশের মধ্যে আনতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে খেলাপি কমতে সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া কিছু ব্যাংক আমানতের বিপরীতে ঋণের অনুপাত (এডিআর), খেলাপি ও তারল্য ঘাটতিসহ নানা সমস্যায় রয়েছে। তাদের ডেকে সমস্যা দূর করতে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন প্রমুখ।
সম্পাদক: মোঃ শাহাব উদ্দিন, প্রকাশক: মোঃ শাহজাদা হোসাইন, নির্বাহী সম্পাদক : এম শহিদুল ইসলাম নয়ন
অফিস: ১৪/১৬ কাজলারপাড়, ভাঙ্গাপ্রেস, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬
@ Economicnews24 2025 | All Rights Reserved