
ভূমিকম্পে তুরস্কের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৫ বিলিয়ন ডলার। যা দেশটির জিডিপির প্রায় ২.৫ শতাংশ। এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে নিজেদের এ হিসেবের কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
তবে তুর্কি এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড বিজনেস কনফেডারেশন (তুর্কনফেড) ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি বলছে। তুরস্কের ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বিধ্বংসী ভূমিকম্পে তুরস্কের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে, যা দেশটির জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ।
তুর্কি ব্যবসায়িক গোষ্ঠিটির অনুমান, ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে তুরস্কের আবাসিক ভবনগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক হিসাবে যা প্রায় ৭০ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া জাতীয় আয়ের ক্ষেত্রে আরও ১০ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ভূমিকম্পের ১১ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে এক তরুণীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (দক্ষিণ তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরে ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে ওই কিশোরীকে বের করে নিয়ে আসেন উদ্ধারকর্মীরা। উদ্ধারের পরই তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন মতে, ভূমিকম্পের ২৪৮ ঘণ্টা পর একটি বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে ১৭ বছর বয়সী আলায়না ওলমেজ নামে ওই কিশোরীকে বের করে আনা হয়। ওই এলাকায় এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। যদিও এখন কাউকে জীবিত খুঁজে পাওয়ার আশা প্রায় ম্লান হয়ে গেছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের কাহারমানমারাস শহরে ভূমিকম্প আঘাত হানে। যা তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তের বিশাল একটি এলাকাকে কাঁপিয়ে দেয়। শক্তিশালী ৭.৮ ও ৭.৬ মাত্রার দুই ভূমিকম্পের ঘটনা ১১ দিনে গড়িয়েছে। তবে উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। সবশেষ পাওয়া খবরে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত দুই দেশে মৃতের সংখ্যা ৪২ হাজার ছাড়িয়েছে।
ভূমিকম্পের পর ১১তম দিনে এসে কাউকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হলেও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না স্বেচ্ছাসেবীরা। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এমএসএফ’র দাবি, ধ্বংসস্তূপের নিচে কতোক্ষণ জীবিত থাকা সম্ভব সেটা পুরোপুরি নির্ভর করে শারীরিক কাঠামো, বয়স ও সবলতার ওপর।
বাতাস বা পানির সংস্পর্শে থাকলেও দীর্ঘদিন প্রাণরক্ষা করা যায়। তাই জীবিতদের উদ্ধারে এখনও আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
অভিযানে মরদেহের সঙ্গে সঙ্গে মাঝেমাঝেই প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে।
ভূমিকম্পের ১০ দিন পর বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) হাতায় প্রদেশের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার হন এক নারী। তার কোলে ছিল ছোট্ট সন্তান। এলা নামের ওই নারী পাশেই আগলে রেখেছিলেন অপর সন্তানকে। দীর্ঘসময় উদ্ধারকর্মীরা তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। অবশেষে তিনজনকে অক্ষত অবস্থায় বের করে আনা হয়। অবশ্য অনাহারে অন্ধকার ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকায় শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন সবাই।
ওই দিনই আনতাকিয়া প্রদেশের ভেঙে পড়া আবাসিক ভবনের নিচ থেকে উদ্ধার হন এক পুরুষ। এরপর ভূমিকম্পের ২৪৮ ঘণ্টা পর কাহরামানমারস প্রদেশে ১৭ বছর বয়সী কিশোরী ওলমেজকে উদ্ধার করা হলো।
সম্পাদক: মোঃ শাহাব উদ্দিন, প্রকাশক: মোঃ শাহজাদা হোসাইন, নির্বাহী সম্পাদক : এম শহিদুল ইসলাম নয়ন
অফিস: ১৪/১৬ কাজলারপাড়, ভাঙ্গাপ্রেস, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬
@ Economicnews24 2025 | All Rights Reserved