
১৯৭১ সালে সেনাবাহিনী কোনো ভুল করেনি উল্লেখ করে পাকিস্তান ভাগের দায় রাজনীতিবিদদের ঘাড়ে চাপালেন দেশটির বিদায়ী চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। একইসঙ্গে স্বীকার করেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে বারবার অসাংবিধানিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছে সামরিক বাহিনী। বুধবার (২৩ নভেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে সামরিক বাহিনীর সদর দফতরে এক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন তিনি। খবর ডনের।
বেশ কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে উঠে আসছে ৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রসঙ্গ। সম্প্রতি পিটিআইয়ের লংমার্চ কর্মসূচিতে দলটির নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দাবি করেন, ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও, তৎকালীন সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় পাকিস্তান ভাগ হয়। ইমরানের ওই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এবার প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের বিদায়ী চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। বুধবার (২৩ নভেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিদায়ী ভাষণে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর ব্যর্থতা নয়, বরং রাজনৈতিক ব্যর্থতার কারণেই ৭১-এ ভাগ হয়েছিল পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, গেল ৭০ বছরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী একাধিকবার অসাংবিধানিকভাবে দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছে বলেও স্বীকার করেন জেনারেল বাজওয়া। যদিও, আগামীতে আর কখনই পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বাজওয়া বলেন, ‘আমি কিছু তথ্য সংশোধন করতে চাই। প্রথমত, সাবেক পূর্ব পাকিস্তান সামরিক ব্যর্থতা ছিল না, এটি ছিল একটি রাজনৈতিক ব্যর্থতা।’ বিদায়ী সেনাপ্রধান আরও বলেন, সম্প্রতি পিটিআই প্রধান ইমরান খান তার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোপুরি অসত্য ও ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধে পাকিস্তানের সেনাদের সংখ্যা ৯২ হাজার ছিল না, এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৪ হাজার। বাকিরা ছিলেন সরকারের বিভিন্ন দফতরের কর্মী। ভারতীয় সেনাবাহিনীর আড়াই লাখ সেনা ও মুক্তি বাহিনীর ২ লাখ সদস্যের বিরুদ্ধে এই ৩৪ হাজার সেনা লড়াই করে।
গেল ছয় বছর ধরে পাকিস্তানের চিফ অব আর্মি স্টাফের দায়িত্বে রয়েছেন জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। আগামী ২৯ নভেম্বর অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে তার। ২০১৬ সালে তিন বছরের জন্য তিনি চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত হলেও, পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে তার মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনিরের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কাছে তার নাম অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সম্পাদক: মোঃ শাহাব উদ্দিন, প্রকাশক: মোঃ শাহজাদা হোসাইন, নির্বাহী সম্পাদক : এম শহিদুল ইসলাম নয়ন
অফিস: ১৪/১৬ কাজলারপাড়, ভাঙ্গাপ্রেস, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২৩৬
@ Economicnews24 2025 | All Rights Reserved