বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার পাবে ৫ লাখ, আহতরা সর্বোচ্চ এক লাখ বাংলাদেশকে ৬০০ মিলিয়ন ইউরো দেবে জার্মানি ১০ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ রেখে গেছে হাসিনা সরকার ২ স্বতন্ত্র পরিচালক পেল ডিএসই লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, মাস্টারকার্ড ও প্রিয়শপ এর যৌথ উদ্যোগে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য কো-ব্র্যান্ডেড টাইটেনিয়াম ক্রেডিট কার্ড চালু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান: মির্জা ফখরুল আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিশেষ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে ফরেন রেমিট্যান্স হাউসগুলোর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দেশে প্রথমবারের মতো আর্মরশেল প্রটেকশনের ফোন নোট ৬০ এনেছে রিয়েলমি শেখ হাসিনাসহ সহযোগীদের বিচার দাবি ফারুক হাসানের

ভৈরবে মেঘনা নদীতে ভাঙ্গনে হুমকির মুখে সার গুদাম, তেলের ডিপো ও রেলওয়ে সেতু

ইমন মাহমুদ লিটন
  • আপডেট : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৮৮ Time View
oplus_0

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। আজ ৮ সেপ্টেম্বর রোববার রাত ৩টার দিকে এই ভাঙ্গন দেখা দেই। মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে  ১শ মিটার ভূমিসহ প্রায় ২০টি কাঁচা ঘর ও যমুনা অয়েল কোম্পানির একাংশসহ বেশ কিছু স্থাপনা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে ভৈরব বাজার ও মেঘনার উপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু, হাবিল আব্দুল হালিম রেলওয়ে সেতু ও জিল্লুর রহমান রেলসেতু। এ ভাঙ্গনে পুরোপুরি ভাবে মেঘনা গ্রাস করেছে নদীর তীরবর্তী ফেরিঘাট থেকে বাজারে প্রবেশের বাইপাস সড়কটি। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় হুমকিতে পড়েছে কয়েক হাজার বস্তা সারসহ বিএডিসি গোডাউন, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি। দ্রুত সমাধান না হলে রক্ষা হবে না নদী বন্দর ভৈরব বাজার। 

এই অবস্থায় দ্রুত ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবী ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের।

জানা যায়, হাওড়ের উজানের পানি মেঘনা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাঁদপুর হয়ে সমুদ্রে মিলিত হয়। গত কয়েকদিনে বৃষ্টিতে ভৈরব মেঘনা নদীর পানি বেড়েছে তবে তা স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে।

তবে মেঘনার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ বেশ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বেড়ে বন্যাকবলিত হওয়ার পর ওই জেলাগুলোর পানি ভৈরবের মেঘনা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে ভৈরবে মেঘনার পানির প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ের কারণে রোববার মধ্যরাত থেকে ভাঙন দেখা দেয়। রাত আনুমানিক তিনটার দিকে ভাঙ্গন শুরু হয়। এই সময় অনেকেই ঘুমে থাকায় কিছু বুঝে উঠার আগেই এক এক করে কাঁচা ঘর, যমুনা অয়েলের প্রতিরোধ দেয়াল, ইবাদত খানা ও তেলের পাইপ লাইন নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ভোর হওয়ার পর অনেকে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায়। ভাঙ্গনে ৫০ মিটার বাইপাস সড়ক নদীর গর্ভে চলে যায়। অনেকেই অভিযোগ করেন নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের কারণেই এই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

এদিকে ভৈরবে মেঘনার পানির প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ের কারণে ২০২২ সালে ভাঙন দেখা দিলে দুটি রাইস মিল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনে দুজন মৃত্যু হয়। 

এর আগে ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালে ভৈরব রেলওয়ের ৫০ একর জায়গাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি, অফিস এবং বাজারের ৩০টি ঘরসহ ১০ একর জায়গা প্রমত্তা মেঘনার স্রোত ও ঢেউয়ের কারণে নদীগর্ভে বিলীন হয়। মেঘনাপাড় রক্ষায় সরকার বাঁধ দিলেও ভাঙন ঠেকাতে পারছে না।

এ বিষয়ে আলেয়া বেগম, পিয়ারা বেগম, রোজিনা ও মজনু মিয়া জানান, রাতে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ যমুনা ওয়েল কোম্পানির দারোয়ান আমাদের ঘুম থেকে তুলে। আমরা কোন রকম পরিবারের সদস্যদের বাচাঁতে পারলেও আমরা সব কিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছি। এখন আমাদের মাথা গুজার ঠাঁই নেই। এই এলাকায় ৬০টি পরিবার রয়েছে। এদের মধ্যে ২০টি পরিবার আজ ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। নদীতে ড্রেজার লাগিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে আমরা আজ পথে বসেছি।  

পানি উন্নয়ন বোর্ড কিশোরগঞ্জের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আতিকুল গণি জানান, এখানে খাদ্য গোদাম, সার কারখানা ও যমুনা অয়েল রক্ষা করতে আমাদের সার্ভে কাজ অব্যাহত রয়েছে। নদী ক্রস সেকশনের কাজ শেষে বলা যাবে নদীর গভীরতা কতটুকু। প্রাথমিক ভাবে ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ বালি ভর্তিকরে ডাম্পিং করে দেয়া হবে। ভাঙ্গনের বিষয়ে হাইড্রোগ্রাফ করার পর যথাযথ কারণ জানা যাবে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রেদোয়ান আহম্মেদ রাফি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে খাদ্য গুদাম রয়েছে। ২টি বিএডিসি গোডাউনে ৯ হাজার বস্তা সার রয়েছে। যা দিয়ে হাওর অঞ্চলসহ বিভিন্ন জায়গার প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। নদীর পাড়ের ভাঙন বিষয়ে প্রশাসন সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যরা ও বিএডিসি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। এখন পর্যন্ত মানুষ নিরাপদে চলে এসেছে। বাড়ি ঘরের ক্ষতি হলেও কারো জানমালের ক্ষতি হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS