শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি ক্ষমতাসীনদের হাতিয়ার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৯৪ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি’র) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত করে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বও সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এ আইন পাস হওয়ার পর থেকেই এ আইনের ব্যবহার ও বিচার পদ্ধতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা, সমালোচনা হয়েছে। নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিক মহল এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংখ্যালঘু ও সংবাদকর্মী নির্যাতন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত বিভিন্ন ধারা সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবিধানসম্মত বাকস্বাধীনতা ও তথ্য প্রকাশের আইনগত অধিকার চর্চায় সক্রিয় সাধারণ নাগরিকদের দমন নিপীড়ন ও হয়রানির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের সাংবিধানিক অঙ্গীকার রক্ষা করার বদলে অসৎ উদ্দেশ্যে চরিতার্থ করতে এই আইনের অপব্যবহার পরিলক্ষিত বলেও তিনি জানান।

২০১৮ সালের গোড়া থেকে এই আইন প্রণয়ন এবং তার ব্যবহারের হিসেবে এটা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, ক্ষমতাসীনদের অপছন্দের  ভিন্নমত প্রকাশের কারণে এই আইনে গ্রেফতার না হওয়াই এখন একধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট দাবি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে যাদের নিপীড়ন করা হয়েছে বা যারা নেহাত হয়রানির শিকার হয়ে জেলে আছেন সেইসব সাংবাদকর্মী, সংখ্যালঘু ও অন্যান্যদের অবিলম্বে মুক্তিসহ যথাপোযুক্ত ক্ষতিপূরণ করতে হবে। নওগাঁর ভূমি কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের র‌্যাবে হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যুর বিষয়ে উচ্চ বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তিসহ জেসমিনের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে সকল মানুষের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলকভাবে মিথ্যা মামলা যারা করেছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিচারের আওতায় এনে যথাপোযুক্ত শাস্তি ব্যবস্থা করতে হবে। সংবিধান সম্মত বাকস্বাধীনতা ও তথ্য প্রকাশে আইনগত অধিকার চর্চায় বাধা প্রদান করে কোন আইন পাশ করা যাবে না মর্মে সরকারকে অঙ্গীকার ঘোষণা করতে হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট এর অধীনে যাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ঐসকল সম্পাদক, সংবাদকর্মী এবং অন্যান্যদেও বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে নই। তবে আইন করতে হলে একাধিকবার সংবাদপত্রের সম্পাদক, সাংবাদিক প্রতিনিধিসহ সকল অংশীজনের সাথে অর্থপূর্ণ আলোচনা এবং সম্মতির ভিত্তিতে তা করতে হবে। সেই সঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামে যখন তখন কাউকে গ্রেফতার বা হয়রানি করা যাবে না বলেও তিনি দাবি পেশ করেন।

এসময় সভাপ্রধান হিসেবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- এএলআরডি ও সমন্বয়কারী, নিজেরা করি সংগঠনের চেয়ারপার্সন খুশী কবীর। তিনি বলেন, ‘আইনটি গণতন্ত্রের ওপর আঘাত করেছে। তাই আইনটি বাতিলের দাবি করছি।’

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সুপ্রীম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তবারক হোসেইন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ও কার্যকরী সভাপতি ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS