বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট প্রসঙ্গে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর আইনগত ভিত্তি নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র সুস্থতা কামনায় সাদাকা হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন এতিমখানা মাদ্রাসায় আগামীকাল যুবদলের ছাগলের মাংস বিতরণ কর্মসূচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠনের কর্মবিরতি ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগদানের নির্দেশনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় চুয়াডাঙ্গায় ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের দোয়া মাহফিল কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলায় উপচেপড়া ভিড়: চুয়াডাঙ্গায় দ্বিতীয় দিনেও জমজমাট আয়োজন চুয়াডাঙ্গায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত যশোরে কমিউনিটি ব্যাংকের ১৯তম শাখার শুভ উদ্বোধন মাধবপুর আফরোজ হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসীর দাবিতে মানববন্ধন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো ঋণ প্রাপ্তি: শিল্প উপদেষ্টা

বরিশালের বিখ্যাত গুঠিয়ার সন্দেশ স্বাদে ঘ্রাণে অনন্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২৪১ Time View

এস এল টি তুহিন ,বরিশাল : বরিশালের গুঠিয়ার দীর্ঘ ৬০ বছরের ঐতিহ্য গুঠিয়ার সন্দেশ স্বাদে ঘ্রাণে এক অনন্য ও দেশ জোড়া খ্যাতিতে আজ বিখ্যাত গুঠিয়া। এই সন্দেশে- উপরে কিশমিশ দেওয়া। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ডালিতে ঝরা শিউলি ফুল সাজিয়ে রাখা। একটু কাছে এলে টাটকা গরুর দুধের ঘ্রাণ। অনন্য স্বাদের এই সন্দেশের নামকরণ এলাকার নামেই। দেশজোড়া সেই সন্দেশের খ্যাতি। গুঠিয়ার সন্দেশ নামে পরিচিত এই সন্দেশ বরিশালের প্রায় ৬০ বছরের ঐতিহ্য। নাম শুনলেই সবার মাথায় চলে আসে খাঁটি ছানা দিয়ে তৈরি এই খাবারটির লোভনীয় স্বাদের কথা। অনেকের মতে গুঠিয়া ইউনিয়নটি আজ খ্যাতি লাভ করেছে এই সন্দেশের জন্যই।

বরিশাল থেকে গুঠিয়া ইউনিয়নের দূরত্ব প্রায় ১৭ কিলোমিটার। দূরত্বের কথা ভুলে ভোজনবিলাসীরা ছুটে যান এই সন্দেশের স্বাদ নিতে। কারণ অত্যন্ত মুখরোচক এই সন্দেশে খাঁটি ছানা ও চিনি ছাড়া অন্য কিছুই ব্যবহার করা হয় না। এই সন্দেশের আরও বিশেষত্ব হলো এর থেকে গরুর টাটকা দুধের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম গুঠিয়া। বেশ বছর কয়েক আগে এস সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু’র প্রতিষ্ঠিত বায়তুল আমান জামে মসজিদ ও কমপ্লেক্সের জন্য বাংলাদেশ সহ বিশ্বে আলোচনায় এসেছে এই এলাকাটি। কিন্তু গুঠিয়ার সুখ্যাতি সুস্বাদু এই সন্দেশের জন্য। জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া থেকে সন্দেশ তৈরির কৌশল শিখে আসেন গুঠিয়া এলাকার সতীশ চন্দ্র দাস নামের এক ময়রা। সেই কৌশলের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে তিনি ১৯৬২ সালে তৈরি করেন এই সন্দেশ, যা এখন গুঠিয়ার সন্দেশ নামে পরিচিত।

সতীশ চন্দ্র বহু বছর আগে কলকাতায় চলে যান এবং সেখানেই মারা যান। কিন্তু তার বিখ্যাত সন্দেশের ঐতিহ্য ধরে রাখেন এখানকার বেশ কয়েকজন ময়রা। বাদশা হাওলাদার ছিলেন তাদেরই একজন। সতীশের রেসিপিতে সন্দেশ তৈরি করে এর খ্যাতি দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেন মূলত বাদশা হাওলাদার। পরে বাদশার ছেলে শাওন হাওলাদারের হাতে ব্যবসা ছেড়ে দেন। শাওন বাবার দেখানো পথে হেঁটেই ধরে রেখেছেন ঐতিহ্য। বাবার কাছ থেকে বিখ্যাত এই সন্দেশের প্রস্তুত প্রণালি শিখেছেন শাওন হাওলাদার। এ বিষয়ে শাওন হাওলাদার বলেন, পৌষ, মাঘ ও বৈশাখে সন্দেশের চাহিদা বাড়ে। ‘দুধ, চিনির দাম বেড়েছে। সন্দেশের কেজি বর্তমানে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। কেজিতে ২৫টির মতো সন্দেশ হয়। বেশি লাভ থাকে না। তবু ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে মানের সঙ্গে আপস করি না। কারণ, এর সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য মিশে আছে।’ শাওন জানালেন সন্দেশ তৈরির প্রক্রিয়া।

তিনি বলেন, সাধারণত ৬-৭ কেজি দুধে ১ কেজি ছানা পাওয়া যায়। সেই ছানার সঙ্গে ১ কেজি চিনি মিশিয়ে অল্প জাল দিতে হয়। ২০-৩০ মিনিট পর পাকিয়ে অল্প আঁচে ৫ মিনিট রাখলেই কাঁচামাল তৈরি। তা পরিমাণমতো নিয়ে কাঠের ওপরে রেখে সন্দেশের আকার দেওয়া হয়। সন্দেশ তৈরিতে পরিমাণমতো আঁচ ও পাকই হলো মূল। গুঠিয়া বাজারে মাত্র ৬-৭ জন এখনও এই সন্দেশের ঐতিহ্য আঁকড়ে আছেন। তাদের মধ্যে পরিমল চন্দ্র,অমল ময়রা, শ্যামল চন্দ্র ভদ্র,টিটুল হাওলাদার,জালাল হাওলাদার অন্যতম।

এখানের ময়রারা বললেন, খাঁটি ছানা ও চিনি ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার না করায় এই সন্দেশ সুস্বাদু। বর্তমানে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন দোকানে এই গুঠিয়ার সন্দেশ পাওয়া গেলেও সেগুলো আসল কিনা তা নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন। ফলে সিংহভাগ ক্রেতাই আসল সন্দেশের খোঁজে বরিশাল শহর থেকে গুঠিয়া সেতু সংলগ্ন বাজারে ছুটে যান সন্দেশ কিনতে। পার্শ্ববর্তী বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ ও ঝালকাঠিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এখানে সন্দেশ ক্রয় করতে আসেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরতরা গ্রামের বাড়িতে আসলে পরিবারের সদস্য ও শুভাকাক্ষীদের জন্য গুঠিয়ার সন্দেশ ক্রয় করে নিয়ে যান। দেশ থেকে স্বজনরা বিদেশেও প্রিয়জনের জন্য সন্দেশ পাঠান। তাই সব দিক দিয়ে সেরা গুটিয়ার সন্দেশ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS